বুড়িগঙ্গা নিউজ ডেস্ক : ১২ বছর ধরে ময়লার স্তুপে বসবাস করে আসছে ওরা!? প্রধানমন্ত্রীর কাছে উক্ত খাস জায়গায় ১ গন্ডা জমির উপর ১ বাড়ী উপহার হিসেবে পেতে চায় তারা।
একটি পরিবার কতো অসহায় হলে পরে পরিত্যাক্ত টয়লেট ও ময়লা আবর্জনার স্তুপে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করতে পারে!? বলছিলাম চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া উপজেলার লোহাগাড়া সদর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের দিন মজুর মোহাম্মদ জসিম উদ্দীন এর পরিবারের কথা। তিনি তার স্ত্রী রেজিয়া আক্তার মা বাবা ও ২ কন্যা ৩ পুত্রকে নিয়ে ১২ বছর ধরে বসবাস করে আসছে ঝুপড়ি একটি কুঁড়েঘরে। যেটি লোহাগাড়ার ৪ নং ওয়ার্ড দরবেশহাটস্থ পরিত্যক্ত গরুবাজারের পরিত্যক্ত টয়লেট ও ময়লা আবর্জনার স্তুপে অবস্থিত।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় আজ থেকে ১২/১৩ বছর ধরে পরিবার পরিজন নিয়ে কোথাও মাথা গুঁজারঠাই না পেয়ে এ ময়লা আবর্জনার স্তুপেই জসিম উদ্দীন মা বাবাসহ তার পরিবারের প্রায় ১০ জন সদস্য নিয়ে ঝুপড়ি বাড়িতেই বসবাস করে আসছেন। যেটি পুরাতন গরু বাজার হলেও ২০/২১ বছর আগে থেকে ঐ জায়গা আর গরু বাজার হিসাবে ব্যবহার হচ্ছে না। জসিম উক্ত জায়গায় ময়লা পরিষ্কার করে ওখানে ১ গন্ডামতো যায়গার এ বাড়িতে বসবাস করেন। বাড়িতে আড়াআড়ি ভাবে ২ ঘরের মধ্যে রান্নার জন্য আরও ১ টি ঘর তৈরি করে ৩ রুম করা হয়েছে। ১ রুমে স্ত্রী নিয়ে জসিম, আর ১ রুমে উঠতি বয়সি ২ মেয়ে এবং ৩ ছেলে আড়াআড়িভাবে পড়ে থাকে। মাঝে মাঝে মা-বাবাও তাদের সাে থাকে। বাকী ঘরে রান্না করা হয়।
মোটকথা, বলতে গেলে অনেক কষ্টে তাদের দিন যাপন করতে হচ্ছে৷ এ ময়লার স্তুপেই।
মোহাম্মদ জসিম উদ্দীন তার নিদারুণ কষ্টের কথা বুঝিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান ও স্থানীয় চট্টগ্রাম-১৫ আসনের সাংসদের সুপারিশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে তার বসবাসকৃত জায়গাটি তার নামে বরাদ্দ দিয়ে ওখানে ১টি প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পাওয়ার প্রার্থনা করে ডাকযোগে ১টি আবেদন পাঠান এবং জেলা প্রশাসক চট্টগ্রাম বরাবরে আরেকটি দরখাস্ত দায়ের করেন।
দরখাস্তে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার বসবাসকৃত জায়গাটি তার নামে বরাদ্দ দিয়ে ওখানে ১টি প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পাওয়ার প্রার্থনা করেন।
আমি একজন অসহায় ভূমিহীন পরিবার হই। দীর্ঘ ১২ বছর ধরে দরবেশহাট পুরাতন গরুর বাজারের দক্ষিপাশে একটি সরকারি পরিত্যক্ত টয়লেটের দক্ষিণে বাজারের ময়লা আবর্জনার স্তুপ পড়ে থাকে। আমাদের কোন জায়গা না থাকায় উক্ত জায়গাটি ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করিয়া স্থানীয় জন প্রতিনিধির আর্থিক সাহায্য নিয়ে ইট দিয়ে বেড়া ও উপরে পুরাতন টিন দিয়ে একটি গোয়াল ঘরের মত ঝুঁকিপূর্ণ ছোট বাড়ি নির্মান করিয়া আমার পিতা, মাতা, স্ত্রী, পুত্র, কন্যাকে নিয়ে অসহায় অবস্থায় ০১ গন্ডা অর্থাৎ ২ শতক জয়গার উপর খুবই কষ্টের মধ্যে বসবাস করে আসছি। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে উক্ত গরুর বাজারটি এখন বাজার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে না এবং এটি পরিত্যক্ত ময়লা অবর্জনার স্তুপ অবস্থায় পড়ে আছে। এই অবস্থায় আমি আপনার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে আমার ঝুঁকিপূর্ণ বাড়ির স্থলে নতুন ঘর পাইবার আবেদন করছি।
উল্লেখ্য যে, বর্তমান বাড়িতে আমার একটি মেয়ে বিবাহিত, একটি ছেলে ও একটি মেয়ে স্কুলে পড়ালেখা করে। আমার কাছে উক্ত জায়গা ছাড়া আর কোন জয়গা জমি নেই।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়। জসিম একজন অসহায় লোক।তিনি পরিবারের সকলকে নিয়ে ময়লা আবর্জনার স্তপে এ ঝুপড়ি বাড়িতেই বসবাস করে আসছেন ১২ বছর ধরে। তার অন্য কোথাও থাকবার কোন জায়গা নাই। সরকারিভাবে তাকে তার বসবাসের জায়গাটি বরাদ্দ দিলে এবং সেখানে একটি বাড়ি নির্মাণ করে দিলে ভালো হবে। সকলে দাবি করেন সে এর হকদার।
জানতে চাইলে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নুরুচ্ছফা কোম্পানী জানান, আমরা জনপ্রতিনিধি হিসাবে যে কেউই আমাদের কাছে আসতে পারে। মোহাম্মদ জসিম উদ্দীন একজন অসহায় লোক। সে লোহাগাড়ার ৪ নং ওয়ার্ড দরবেশহাটস্থ পরিত্যক্ত গরুবাজারের পরিত্যক্ত টয়লেট ও ময়লা-আবর্জনার স্তুপে সরকারি খাস জায়গায় থাকে। সে ওখানে ১ গন্ডা জায়গায় প্রধানমন্ত্রীর ঘর পাবার জন্য ১টি আবেদন করে। আমি তার অসহায়ত্ব দেখে সুপারিশ করি।
আপনার মতামত লিখুন :