বুড়িগঙ্গা নিউজ ডেস্ক : বছরের অধিকাংশ সময় শীর্ষ দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় ঢাকা প্রথম বা দ্বিতীয় অবস্থানে থাকে। তবে ঈদের ছুটিতে রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যাওয়ায় সাধারণত শহরের বায়ুদূষণের মাত্রা কিছুটা কমতে দেখা যায়। অন্তত ঈদের পরদিন একটি বড় সময় নির্মল বাতাস পায় রাজধানীবাসী। গত ১৩টি ঈদের সময়ের তুলনায় এবারই প্রথম ঢাকার বাতাস ছিল আগের চেয়ে দূষিত। অর্থাৎ ঈদের ছুটিতেও ঢাকাবাসী একটু নির্মল বাতাসে শ্বাস নিতে পারেনি। স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়নকেন্দ্র (ক্যাপস) এ তথ্য জানিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি ২০১৬ সাল থেকে বায়ুর মান পর্যবেক্ষণ করছে। এর মধ্যে ঈদের পরের দু’দিনের বায়ুর মানও তারা পর্যবেক্ষণ করে।
ক্যাপস জানায়, ২০১৭ সালের ঈদুল ফিতরের পরের দু’দিন ঢাকার বায়ুমান সূচক ছিল ৪২ ও ৩৬। ২০১৯ সালের ঈদুল ফিতরের পরদিন ঢাকার বায়ুমান সূচক ছিল ৩৭। একই বছর ঈদুল আজহার পরের দু’দিন রাজধানীর বায়ুমান সূচক ছিল ৪৯ ও ২২। ২০২১ সালে ঈদুল আজহার এক দিন পর ঢাকার বায়ুমান সূচক ৪৪ ছিল। গত বছর ঢাকার বায়ুর মানসূচক ২১ ছিল ঈদুল ফিতরের সকালে। যদিও বিকেলে তা কিছুটা বেড়ে ৪৫ হয়। যেখানে স্বাভাবিক সময়ে এই সূচক ২০০-এর বেশি থাকে। কখনও কখনও তা ৪০০-এর কাছাকাছি চলে যায়। এ বছর ঈদের পরের দু’দিন ঢাকার বায়ুমান ছিল গড়ে ১৩০ থেকে ১৫০।
ক্যাপস পরিচালক আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, ২০১৬ সাল থেকে ঢাকায় ১৩টি ঈদের দিনের বায়ুর মানের তথ্য আমাদের কাছে আছে। গত আট বছরের মধ্যে এবার ঢাকায় ঈদের লম্বা ছুটিতেও অস্বাস্থ্যকর ছিল বায়ুর মান। কারণ, এবার তুলনামূলকভাবে ঢাকায় মানুষ বেশি ছিল। এ ছাড়া ঈদের আগে বায়ুদূষণ ছিল ঊর্ধ্বমুখী। অগ্নিকাণ্ডের কারণে ধুলাবালু ও ছাই বাতাসে উড়েছে। এর আগে জুন-জুলাই মাসে ঈদুল ফিতর হয়। এবার ঈদুল ফিতর হয়েছে এপ্রিল মাসে। সঙ্গে ছিল তাপপ্রবাহ। ফলে এবার ঈদের পরের দুই দিন বায়ুর মান বেশি ছিল। অথচ গত ৮ বছরে ঈদের সময়ে বায়ুর মান ছিল ৫০-এর নিচে। ২০২১ সালে জুলাই মাসে ঈদের পরের দু’দিনের নির্দিষ্ট কিছু সময় বায়ুর মান নেমে এসেছিল মাত্র ৪-এ। অর্থাৎ সে সময় ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে নির্মল বায়ু। যদিও তখন লকডাউন ও বৃষ্টি ছিল। মূলত এর প্রভাবেই ওই ঈদে ঢাকাবাসী নির্মল বায়ুতে শ্বাস নিতে পেরেছিল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঈদ সামনে রেখে এবার ঢাকা ছেড়েছিলেন ১ কোটি ১৩ লাখ মানুষ। এ সময়ে বেশিরভাগ নির্মাণকাজ ছিল বন্ধ। ঢাকায় গাড়ি চলাচলও ছিল খুব কম। এ সবকিছু মিলিয়ে বায়ুর মানের অস্বাভাবিক উন্নতি হওয়ার কথা। কিন্তু কম বৃষ্টি এবং তাপপ্রবাহের কারণে দূষণ বেড়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :