বুড়িগঙ্গা নিউজ ডেস্ক : রমনা বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলার ২২ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও বিচার হয়নি। বিচারিক আদালতের দেওয়া রায়ের ৯ বছর পার হলেও উচ্চ আদালতে আপিল এখনও নিষ্পত্তির অপেক্ষায়। এর ফলে আসামিদের দণ্ড কার্যকর করা যাচ্ছে না।
২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল রমনা বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলায় ১০ জন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হন। এ ঘটনায় পুলিশ রমনা থানায় মামলা দায়ের করে। ২০১৪ সালের ২৩ জুন বিচারক আদালতে মামলাটির রায় হয়। রায়ে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের (হুজি-বি) শীর্ষ নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ আটজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। একই বছর বিচারিক আদালতের এ রায়ের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে মাওলানা তাজউদ্দিন, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই, মাওলানা আবু বকর ও আরিফ হাসান ওরফে সুমন হাইকোর্টে ফৌজদারি আপিল দায়ের করেন। এ ছাড়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মুফতি আবদুল হান্নান, মাওলানা আকবর হোসাইন ওরফে হেলাল উদ্দিন, আরিফ হাসান ওরফে সুমন জেল আপিল দায়ের করেন। এর মধ্যে মামলার প্রধান আসামি মুফতি হান্নানের অন্য একটি মামলায় ফাঁসি কার্যকর হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, সুপ্রিম কোর্টের চলমান অবকাশ শেষে ঈদের পর মামলাটি শুনানির জন্য বেঞ্চ নির্ধারণের জন্য প্রধান বিচারপতির কাছে উপস্থাপন করা হবে।
জানা গেছে, রমনা বোমা হামলার ঘটনায় হত্যা মামলায় আট আসামির ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিল হাইকোর্টের কয়েকটি বেঞ্চের কার্যতালিকায় উঠেছিল। কিন্তু শুনানি শেষ হয়ে মামলাটি নিষ্পত্তি হয়নি। সর্বশেষ ২০২১ সালের ২ নভেম্বর রমনা বোমা হামলা মামলা বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চের কার্যতালিকায় ছিল। ওইদিন মামলাটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দেন হাইকোর্টের ওই বেঞ্চ। মামলার নথিপত্র এখন হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখায় রয়েছে।
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, মামলাটি হাইকোর্টের তিনটি বেঞ্চে আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির জন্য কার্যতালিকায় উঠেছিল। তবে কোনো বেঞ্চে শুনানি শেষ হয়নি। এখন প্রধান বিচারপতি নতুন কোনো বেঞ্চ নির্ধারণ করে দিলে শুনানি শুরু হবে। তিনি রাষ্ট্রপক্ষকে দ্রুত আপিল ও ডেথ রেফারেন্স শুনানির উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।
এদিকে একই ঘটনায় বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলাটি এখনও নিম্ন আদালতে বিচারাধীন। ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন এই মামলায় এখন পর্যন্ত ৮৪ জনের মধ্যে ৫৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। আগামী ১৭ মে আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানির তারিখ ধার্য রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :