বুড়িগঙ্গা নিউজ ডেস্ক : দুই মেয়াদে টানা ১০ বছরের অধ্যায় শেষে বঙ্গভবন থেকে আজ বিদায় নিচ্ছেন মো. আবদুল হামিদ। গত রোববার বঙ্গভবনে আবদুল হামিদের শেষ কার্যদিবস ছিল।
বঙ্গভবনে সোমবার বেলা ১১টায় শপথ নেবেন নতুন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। শপথ অনুষ্ঠান শেষে বঙ্গভবন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানানো হবে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে। একটি পূর্ণ মোটর শোভাযাত্রায় বঙ্গভবন থেকে আবদুল হামিদের বিদায় যাত্রা হবে। মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব হস্তান্তরের পর আজই ঢাকার নিকুঞ্জ-১ এলাকায় তাঁর নিজের বাড়িতে উঠবেন আবদুল হামিদ। তিনতলা এই বাড়িতে আসবাবসহ সব সরঞ্জাম দিয়ে বসবাসের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে এবং নেওয়া হয়েছে নিরাপত্তাব্যবস্থা।
দীর্ঘ ১০ বছরের অধিক সময় ধরে তার দুই মেয়াদে দেশের সর্বোচ্চ পদে রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি রাষ্ট্রপতি ভবনে তিনি ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। বঙ্গভবনের ৫২ বছরের ইতিহাসে এটি বিরল দৃষ্টান্ত। আবদুল হামিদ রাজধানীর নিকুঞ্জে নিজ বাসা ‘রাষ্ট্রপতি লজে’ থাকবেন।
বঙ্গভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বঙ্গভবন গেট থেকে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে যাবেন। মাঝখান দিয়ে খোলা জিপে করে রাষ্ট্রপতি যাবেন। তাঁর খোলা জিপে ফুলের পাপড়ি ছুঁড়ে তাঁকে বিদায় জানানো হবে। সেখান থেকে তাঁকে শেষবারের মতো মোটর শোভাযাত্রায় নিকুঞ্জের বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হবে বলেও জানান রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব। প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও সংসদ সদস্য আবদুল হামিদ পাঁচ বছর আগে ২০১৮ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে দেশের ২১তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন। রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন বলেন, শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান শেষে বিদায়ী রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ আজ দুপুরে বঙ্গভবন ত্যাগ করবেন। সন্ধ্যায় নতুন রাষ্ট্রপতি আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গভবনে উঠবেন। তবে আনুষ্ঠানিকতার অংশ হিসেবে আজ সকালে নতুন রাষ্ট্রপতিকে ‘গার্ড অব অনার’ দেওয়া হবে। প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের (পিজিআর) একটি সুসজ্জিত চৌকস অশ্বারোহী দল বিদায়ী রাষ্ট্রপতিকে অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করবে।
এর আগে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ২০১৩ সালের ১৪ মার্চ প্রথমবারের মতো রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেন তিনি। জিল্লুর রহমানের মৃত্যুর পর ২০১৩ সালের ২০ মার্চ তিনি ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হন। পরে আবদুল হামিদ ২০১৩ সালের ২২ এপ্রিল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। রাষ্ট্রপতি হামিদ ১৯৪৪ সালের ১ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলার কামালপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৯ সালে ছাত্রলীগে যোগদানের মাধ্যমে তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। ১৯৬৯ সালের শেষ দিকে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন।
আবদুল হামিদ নবম সংসদে স্পিকার নির্বাচিত হন এবং ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে তিনি ডেপুটি স্পিকার ছিলেন। আবদুল হামিদ এর আগে ১৯৭১ সালে দেশের স্বাধীনতার পর থেকে সাতবার সংসদ সদস্য (এমপি) নির্বাচিত হন।
আপনার মতামত লিখুন :