রমজানে মাগফিরাতের দিনগুলোতে যে দোয়া বেশি বেশি করবেন


Buriganga News প্রকাশের সময় : মার্চ ২২, ২০২৪, ১১:২৯ পূর্বাহ্ন /
রমজানে মাগফিরাতের দিনগুলোতে যে দোয়া বেশি বেশি করবেন

বুড়িগঙ্গা নিউজ ডেস্ক : গুনাহ মাফ ও তাকওয়া অর্জনের মাস রমজান। এ মাসের প্রতিটি মুহূর্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজ রমজানের রহমতের দশক অতিক্রম করে মাগফেরাতের দশকের প্রথম রোজা পালিত হচ্ছে। মাগফেরাতের এ দশকে প্রতিটি মুমিনের আশা আল্লাহ পাক যেন তাকে ক্ষমা করে দেন।

এ মাসে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তিন ভাগে তিন ধরনের গণিমত সংগ্রহের সুযোগ দিয়েছেন মুসলমানদের। হজরত সালমান ফারসি (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে এ বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে। রাসুল (স.) ইরশাদ করেন, রমজান এমন এক মাস, যার শুরুতে রহমত, মাঝে মাগফিরাত এবং শেষে রয়েছে জাহান্নাম থেকে মুক্তি। (ইবনে খুজাইমা: ১৮৮৭)

এ হাদিসের মাধ্যমে রাসুলুল্লাহ (স.) উম্মতকে এই বার্তা দিয়েছেন যে, রমজান পুরোটাই রহমত। এমন নয় যে, প্রথম দশকে গুনাহ ক্ষমা করা হবে না কিংবা দ্বিতীয় দশকে রহমত থাকবে না। বরং গুনাহ ক্ষমা করাও আল্লাহর একটি রহমত এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করানোও আল্লাহর রহমত। অর্থাৎ পুরো রমজানটাই আল্লাহর রহমত। অতএব হাদিসের বার্তাটি হলো- মহান আল্লাহর সেই রহমতে সিক্ত হয়ে তোমাকে সব পাপ ক্ষমা করিয়ে নিতে হবে। তারপর চূড়ান্ত মুক্তি ও নাজাতের জন্য রমজানের শেষ পর্যন্ত সিয়াম সাধনা করে যেতে হবে।

আজ রমজানের দ্বিতীয় দশকের প্রথম দিন। মাগফেরাতের দশকে আল্লাহর কাছে প্রত্যেক মুমিনের বেশি বেশি তওবা ও ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত। কারণ তওবা সফলতার চাবিকাঠি। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, হে মুমিনগণ, তোমরা সবাই তওবা করো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। (সুরা : আন-নুর, আয়াত : ৩১) অন্য আয়াতে ক্ষমা প্রার্থনার নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা ক্ষমা প্রার্থনা করো আল্লাহর কাছে। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা মুজ্জাম্মিল: ২০)

এ ছাড়াও আরেকটি দোয়ার খুব গুরুত্ব রয়েছে পুরো রমজান মাসজুড়ে। বিশেষ করে শেষ দশকে লাইলাতুল কদর তালাশের ক্ষেত্রে। যদিও রমজানের যেকোনো সময় দোয়াটি করা যায়। দোয়াটি হলো- اللَّهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন তুহিব্বুল আফওয়া ফা’ফু আন্নি।’ অর্থ : ‘হে আল্লাহ, আপনি ক্ষমাশীল এবং ক্ষমা পছন্দ করেন, তাই আমাকে ক্ষমা করুন।’ (সূত্র: ইবনে মাজাহ: ৩৮৫০; আহমদ: ২৫৩৮৪)

মাগফেরাতের দশকে বেশি বেশি মাগফেরাতের দোয়া করা উচিত হবে। যদিও অন্য যেকোনো দোয়া করতেও নিষেধ নেই। বরং যেকোনো দোয়া যত বেশি করা যায় ততই ভালো। পবিত্র রমজানের দ্বিতীয় দশকে আমরা কোরআনে বর্ণিত কিছু দোয়া বেশি বেশি পাঠ করতে পারি। একটি দোয়া হলো- ১. رَبِّ إِنِّىْ ظَلَمْتُ نَفْسِىْ فَاغْفِرْ لِىْ উচ্চারণ : ‘রব্বি ইন্নী যলামতু নাফসী ফাগফিরলী।’ অর্থ : ‘হে আমার রব, নিশ্চয় আমি আমার নফসের প্রতি জুলুম করেছি, সুতরাং আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন। (সূরা আল কাসাস: ১৬)

অথবা এই দোয়াটি করা যায়— أَنْتَ وَلِيُّنَا فَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا وَأَنْتَ خَيْرُ الْغَافِرِينَ উচ্চারণ : ‘আনতা ওয়ালিয়্যুনা- ফাগফিরলানা- ওয়ারহামনা- ওয়া আনতা খাইরুল গা-ফিরীন।’ অর্থ : ‘আপনি আমাদের অভিভাবক। সুতরাং আমাদের ক্ষমা করে দিন এবং আপনি উত্তম ক্ষমাশীল।’ (সুরা আল আ‘রাফ: ১৫৫)

এ সংক্রান্ত আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ দোয়া রয়েছে পবিত্র কোরআনে। ওগুলো পড়তে পারেন। যেমন- رَبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ وَأَنْتَ خَيْرُ الرَّاحِمِينَ উচ্চারণ : ‘রব্বিগফির ওয়ারহাম ওয়া আনতা খাইরুর র-হিমীন।’ অর্থ : ‘হে আমাদের রব! আপনি ক্ষমা করুন, দয়া করুন এবং আপনিই সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু।’ (সুরা আল মুমিনুন: ১১৮) আরেকটি দোয়া হলো- رَبَّنَا أَتْمِمْ لَنَا نُورَنَا وَاغْفِرْ لَنَا إِنَّكَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ উচ্চারণ : ‘রব্বানা- আতমিম লানা- নূরানা- ওয়াগফিরলানা- ইন্নাকা ‘আলা- কুল্লি শাইয়িন ক্বদীর।’ অর্থ : ‘হে আমাদের রব, আমাদের জন্য আমাদের আলো পূর্ণ করে দিন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন; নিশ্চয় আপনি সর্ববিষয়ে সর্বক্ষমতাবান।’ (সুরা আত-তাহরিম: ০৮) অথবা এই দোয়াটিও পড়তে পারেন- سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ উচ্চারণ : ‘সামি‘না- ওয়া আত্বা‘না- গুফরা-নাকা রব্বানা- ওয়া ইলাইকাল মাসীর।’ অর্থ : ‘আমরা শুনলাম এবং মানলাম। হে আমাদের রব! আমরা আপনারই (নিকট) ক্ষমা প্রার্থনা করি, আর আপনার দিকেই প্রত্যাবর্তনস্থল। (সুরা বাকারা: ২৮৫)

 

আমাদের ফেসবুক পেইজ